মিয়ানমার ২০১৭ সালের প্রথম দিকেই তার জাতিগত জনসংখ্যার আদমশুমারি চূড়ান্ত করে ফেলবে। দেশটির শ্রম, অভিবাসন ও জনসংখ্যাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সোমবার এ কথা জানিয়েছেন।
তীব্র বিতর্কের মুখে ২০১৪ সালের দেশটির ধর্মীয় ও জাতিগত জনসংখ্যাবিষয়ক আদমশুমারির প্রতিবেদন এখন পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। আদমশুমারি অনুযায়ী, দেশটির জনসংখ্যা ৫ কোটি ১০ লাখ। গত জুলাই মাসে ধর্মবিষয়ক তথ্য প্রকাশ করা হয়। তবে জাতিগত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়নি।
আদমশুমারির সবচেয়ে বড় বিতর্ক ছিল আরাকান রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিয়ে। ২০১৪ সালের আদমশুমারিতে ১৩ লাখ রোহিঙ্গার কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ১৯৮২ সালের নাগরিক আইনে রোহিঙ্গাদেরকে জাতিগত গ্রুপ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।
ওই আইনে বলা হয়েছে, স্বীকৃতি পেতে হলে সংশ্লিষ্ট পরিবারের তিন প্রজন্ম ধরে সেখানে বাস করার প্রমাণ থাকতে হবে। এমনটা প্রমাণ করা মিয়ানমারের বেশির ভাগ লোকের জন্যই কঠিন কাজ।
মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব উ মিন্ত কিয়ানিঙ সোমবার ইরাবতীকে বলেন, প্রতিবেদনটি ২০১৭ সালের প্রথম চার মাসের মধ্যে চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে এর আগে সম্প্রদায় নেতৃবৃন্দ, ইউনিয়ন পর্যায়ের জাতিগতবিষয়ক কমিটি এবং বিশেষজ্ঞদের সাথে আরো আলোচনা করা হবে।
তিনি বলেন, ভুল যাতে না থাকে, সেজন্য প্রতিবেদনটি প্রকাশে তাড়াহুড়া করা হবে না। তিনি বলেন, জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি রাজ্য ও বিভাগীয় পর্যায়েও প্রতিটি জাতিগত গ্রুপের জনসংখ্যার পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হবে।
মন্ত্রণালয়ের জনসংখ্যাবিষয়ক পরিচালক উনি নি বলেন, অনেক কাজ এখনো বাকি রয়ে গেছে। বিভিন্ন উপজাতির মধ্যকার পরিভাষা ও বানান নিয়েও জটিলতা রয়েছে। নির্ভুলতা ও ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট জাতিগত নেতাদের সাথে আলোচনা করা হবে।
নাগা জাতীয় কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক কো নাও আঙ স্যান ইরাবতীকে বলেন, তার কাউন্সিল চায়, নতুন আদমশুমারিতে ‘চিন’ উপজাতিদের থেকে ‘নাগা’ উপজাতিকে আলাদা করা হোক।
মিয়ানমারে ১৯৮৩ সালে শেষ আদমশুমারি হয়েছিল। তখন ১৩৫টি উপজাতিকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল। তাতে নাগাদের চিন হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।